প্রধান বিচারপতির সংবর্ধনা বর্জন করে সুপ্রিমকোর্টে বিক্ষোভ

প্রধান বিচারপতির সংবর্ধনা বর্জন করে বিক্ষোভ সমাবেশ করছেন বিএনপিসহ সরকারবিরোধী আইনজীবীরা। রোববার (৮ অক্টোবর) সুপ্রিমকোর্ট চত্বরে কালো পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ করে আইনজীবীদের মোর্চা ইউনাইটেড লইয়ার্স ফ্রন্ট।এর আগে ৩ অক্টোবর সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির দক্ষিণ হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বর্জনের ঘোষণা দেওয়া হয়।সে সময় লিখিত বক্তব্যে ফ্রন্টের আহ্বায়ক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি গত ১২ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে বাংলাদেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেন। তিনি শপথ নেন ২৬ সেপ্টেম্বর।সুপ্রিমকোর্ট বারের আইনজীবীসহ দেশের সব শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ প্রত্যাশা করেছিল, প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বিচারালয়ের সর্বোচ্চ চেয়ারের মর্যাদা, ভাবগাম্ভীর্য এবং দীর্ঘদিন ধরে গড়ে ওঠা বিচারিক প্রথা বজায় রাখবেন। যদিও তার রাজনৈতিক অতীত এবং বারে আইনজীবী থাকাবস্থায় বর্তমান সরকার ও সরকারি দলের সব প্রকার কর্মকাণ্ডের সঙ্গে প্রশ্নাতীতভাবে তার নিয়মিত অংশ নেওয়া আইনজীবী সমাজের জানা আছে।তিনি বলেন, আমরা অত্যন্ত বেদনাহত মন নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়েছি। প্রধান বিচারপতি নিয়োগের পর থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা নিতে নিতে, একপর্যায়ে সরকারি দলের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা নিলেন, যার সচিত্র প্রতিবেদন গণমাধ্যম এবং সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়। সুপ্রিমকোর্টের ৫২ বছরের ইতিহাসে একটি নজিরবিহীন ঘটনা এবং প্রবীণ আইনজীবীদের ভাষায় বিচার বিভাগের জন্য চরম বেদনার মুহূর্ত।

শুধু তাই নয়, শপথ নেওয়ার দুদিনের মাথায় একটি জেলা সমিতির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিতর্কিত পুলিশ অফিসার, আইনজীবী নিপীড়নকারী এবং নিয়মিত মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী ডিবি হারুনের কাছ থেকে প্রধান বিচারপতি একটি বৃহদাকার ‘তলোয়ার’ উপহার হিসেবে নেওয়ার ছবি গণমাধ্যমে প্রচারের পর বাংলাদেশের আইনজীবী সমাজ হতাশ-বিস্মিত হয়েছে। আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব পালন শুরু করতে না করতেই সংবর্ধনার মেলা এবং নানাবিধ বক্তব্য প্রধান বিচারপতির মতো সর্বোচ্চ সাংবিধানিক বিচারিক পদকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে।এ ছাড়া গত ১ অক্টোবর নেত্রকোনা স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগের আওয়ামী লীগের দলীয় সংবর্ধনা নিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে প্রধান বিচারপতির মতো নিরপেক্ষ পদের মর্যাদা ও সম্মানহানি ঘটিয়েছেন। এতে বিচার বিভাগের ওপর সাধারণ মানুষের অনাস্থা আরও গভীরতর হচ্ছে। বিচার বিভাগ নিপতিত হবে গভীর সংকটে।