নির্বাচনের আগে মামুনুল হকের মুক্তি নিয়ে যা জানা গেল

দেশজুড়ে: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানায় দায়ের করা নাশকতার দুটি মামলায় হেফাজতে ইসলামের সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে জামিন দেননি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। তার আবেদন নামঞ্জুর করে এ বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ৩ মাস (স্ট্যান্ড ওভার) মুলতবি করেছেন আদালত। সে হিসেবে আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে মুক্তির সম্ভাবনা নেই মামুনুল হকের।

সোমবার (১৬ অক্টোবর) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুল আলম। এদিন আদালতে মামুনুল হকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। মামুনুল হকের আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আপিল বিভাগ শেষবারের মতো রাষ্ট্রপক্ষকে চার্জশিট জমা দিতে বলেছেন। না হলে জামিন হতে পারে জানুয়ারিতে।

এর আগে ১০ জুলাই প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ৪ সদস্যের আপিল বিভাগ ৩ মাসের জন্য মামুনুল হকের জামিন শুনানি স্ট্যান্ডওভার করেছিলেন। গত ৩ মে ২০১৩ ও ২০২১ সালে ঢাকার পল্টন ও চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানায় দায়ের করা পাঁচ মামলায় হেফাজতে ইসলামের সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে জামিন দেন হাইকোর্ট। এর মধ্যে পল্টন ও হাটহাজারীর দুই মামলায় হাইকোর্টের জামিনাদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। মামুনুল হকের বিরুদ্ধে প্রায় ৪১টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে নিম্ন আদালতে ১৩টি এবং হাইকোর্টে ৫টি।

২০২১ সালের ৩০ এপ্রিল বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে হেফাজতে ইসলামের আলোচিত নেতা মাওলানা মামুনুল হকের নামে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানায় একটি মামলা দায়ের করেন মামুনুল হকের দাবি করা দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণা। ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানাধীন রয়েল রিসোর্টে জান্নাতসহ মামুনুল হককে আটক করে স্থানীয় লোকজন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে উপস্থিত হলে জান্নাতকে নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে দাবি করেন মামুনুল। এরপর ২০২১ সালের ১৮ এপ্রিল হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হককে গ্রেপ্তার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

আরও  পড়ুন: খালেদা জিয়ার খাবারে বিষ প্রয়োগের অভিযোগ বিএনপির

২০২৪ সালের ৪ জানুয়ারিকে ভোট গ্রহণের সম্ভাব্য তারিখ ধরেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে ঘোষণা হতে পারে তপশিল। সূত্রগুলো বলছে, রেওয়াজ অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল জাতির উদ্দেশে ভাষণের মাধ্যমে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করবেন। তার আগে সিইসি এবং অন্য কমিশনাররা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ভোটের তারিখসহ সার্বিক বিষয়গুলো তাকে অবহিত করবেন।

সংবিধান অনুযায়ী, চলতি সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিন অর্থাৎ ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারির মধ্যে পরবর্তী সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। সেক্ষেত্রে ১ নভেম্বর শুরু হচ্ছে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ক্ষণগণনা। সেক্ষেত্রে আগামী ৪ জানুয়ারি ভোট গ্রহণের দিন ধরেই সব প্রস্তুতি সারছে কমিশন। তাই জানুয়ারীর প্রথম সপ্তাহে নির্বাচনের সম্ভাবনা থাকায় বলা যায় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে মামুনুল হকের মুক্তি আর হচ্ছে না।