অপরাধ: রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বিড়ালদহ এস কে এ ডি এস ফাজিল মাদ্রাসার নতুন কমিটি গঠন করাকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্বে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমানকে মাদ্রাসা থেকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। লোক পাঠিয়ে রাজশাহী-৫ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) ডা. মনসুর রহমান তাকে তুলে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
সোমবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ৯টার দিকে মাদ্রাসা চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার পর মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। পরে পুলিশ গিয়ে অধ্যক্ষকে ফিরিয়ে আনলে শিক্ষার্থীরা তাকে সঙ্গে নিয়ে মাদ্রাসায় ফিরে যায়।
মাদ্রাসাটির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দেওয়া তথ্যমতে, গতকাল সকাল ৯টার দিকে একটি সাদা মাইক্রোতে করে ৬ থেকে ৭ জন মাদ্রাসায় ঢুকে। তারা অধ্যক্ষের কক্ষে গিয়ে তাকে টেনেহিচড়ে নিয়ে যায়। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বাধা দিতে গেলে সবাইকে হুমকি দেয়।
এদিকে ঘটনার পর মাদ্রাসা সংলগ্ন রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে। পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সঙ্গে অধ্যক্ষ ফিরে আসেন। তখন অধ্যক্ষকে সঙ্গে নিয়ে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা মাদ্রাসায় ফিরে যায়। এ সময় অধ্যক্ষ সবাইকে জানান, এমপি ডা. মনসুর রহমান তকে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে আগের কমিটির সভাপতিকে আবারও সভাপতি হিসেবে মনোনয়নের জন্য চাপ দেন।
মাদ্রাসার শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান বলেন, ক্লাস চলাকালে এমন ঘটনায় পুরো মাদ্রাসায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সামনেই এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূকল শান্তির আওতায় আনতে হবে। নয়তো বারবার এমন ঘটনা ঘটবে।
মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল জহুরুল ইসলাম বলেন, মাদ্রাসার নতুন কমিটিতে পূর্বের কমিটির চার বারের সভাপতিকে আবারও নিয়োগ দিতে চান এমপি। নিয়ম অমান্য করে এমনটি কারতে চান তিনি। আর সে কারণেই লাঞ্ছিত করে মাদ্রাসা থেকে অধ্যক্ষকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমাকে অপহরণ করে এমপির লোকজন গাড়িতে করে এমপির বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে এমপি আমাকে নতুন কমিটিতে পুর্বের কমিটির সভাপতির নাম দিতে বলেন। আমি তাকে জানিয়েছিÑ এটা অনিয়ম। এটা আমি করতে পারব না। পরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়টি তিনি জানতে পারলে আমাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।’
অপহরণের অভিযোগ অস্বাীকার করেছেন এমপি ডা. মনসুর রহমান। তিনি বলেন, ‘অধ্যক্ষকে বারংবার ডাকার পরেও তিনি এতদিন দেখা করেননি। তবে আজ (সোমবার) তিনি নিজে এসে দেখা করে নতুন কমিটি নিয়ে কথা বলে গেছেন এবং আমরা একত্রে নাস্তা করেছি। মাদ্রাসার সভাপতি একজন শিক্ষিত মানুষ থাকবে এটাই সাবর চাওয়া। তবে তারা একজন অশিক্ষিত মানুষকে সভাপতি করতে চাইছেন।’অপহরণের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল আলম।