প্রচ্ছদ জাতীয় তারেক রহমানের ফোনে মনোনয়নবঞ্চিত হলেন যিনি

তারেক রহমানের ফোনে মনোনয়নবঞ্চিত হলেন যিনি

আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এখন এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে। গত ৩ নভেম্বর ২৩৭টি আসনে একক প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। ৬৩টি আসন ফাঁকা রাখা হয়েছে।

এর মধ্যে নড়াইল-২ (সদরের একাংশ ও লোহাগড়া) আসন জোটসঙ্গীদের জন্য কিংবা পরবর্তী বিবেচনার জন্য ফাঁকা রাখা হয়েছে। এই আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী হলেন দলের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম।

তিনি অনেক আগে থেকেই ধানের শীষের পক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে আসছেন। কিন্তু গত ৩ নভেম্বর সন্ধ্যায় দলীয় প্রার্থী ঘোষণার পর মনোনয়ন প্রত্যাশীর মনিরুল ইসলামের নাম প্রার্থী তালিকায় না থাকায় জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় মনোনয়নের দাবিতে সোমবার (১০ নভেম্বর) বিকালে সদর উপজেলার মালিবাগ মোড়ে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলামের পক্ষে বিশাল এক সমাবেশ করেছেন তার পক্ষীয় নেতাকর্মীরা।

বিষয়টি লন্ডন থেকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ করছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। নিজে প্রতিটি আসনের মতো এ আসনটিতেও প্রার্থীর জনপ্রিয়তা, গ্রহণযোগ্যতা এবং সাংগঠনিক সক্ষমতা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। শুধু পর্যবেক্ষণ নয়, তিনি ব্যক্তিগতভাবে মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) রাতে মনোনয়ন প্রত্যাশী মনিরুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি ফোন করে নির্বাচনি প্রচারণায় পূর্ণ উদ্যোমে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশনা দিয়েছন। তারেক রহমানের এই ফোন কলে তার মনোনয়ন এক প্রকার নিশ্চিত বলে মনে করছেন মনিরুল ইসলাম।

জানতে চাইলে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে মাঠে গণসংযোগকালে হঠাৎই দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ফোন করে বলেন, ‘মনিরুল কেমন আছো? অত বড় সমাবেশ করে লাভ নেই। বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ভোট চাও। সমাবেশ করার দরকার নেই। তুমি আমার ভাই, তুমি আমার পরিবারের লোক। সংগঠন তৈরি কর।’ এ সময় আমার সঙ্গে থাকা লোহাগড়া থানা বিএনপির সভাপতি আহাদুজ্জামান বাটু ও সাধারণ সম্পাদক সুলতানুজ্জামান সেলিমের সঙ্গেও তিনি কথা বলেছেন। এতে আমি মনে করি এবং এটাই সত্য; ইনশাল্লাহ নড়াইল-২ আসনে ধানের শীষ প্রতীক বিএনপির থাকবে।

জানা গেছে, এ আসনটিতে সমর্থন পেতে পারেন জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের (১১ দল) সমন্বয়ক ও শরিক দল ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপির) কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ।

এদিকে মনোনয়নপ্রত্যাশী সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম নড়াইল-২ (সদরের একাংশ ও লোহাগড়া) আসনের বিভিন্ন মিছিল, মিটিং ও সমাবেশ এমনকি বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে উঠান বৈঠক করছেন। ধানের শীষের পক্ষে তার পক্ষের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। বিভিন্ন হাট-বাজার-ঘাটে পথে প্রান্তরে তিনি গণসংযোগও করছেন। এ অবস্থায় দলীয় মনোনয়ন না পেলে নড়াইল জেলা বিএনপির আলোচিত এই নেতার নাম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লোকমুখে প্রচারিত হচ্ছে।

একই সূত্র জানিয়েছে, পরবর্তী বিবেচনায় থাকা এ আসনটিতে শেষপর্যন্ত বিএনপি থেকে কাউকে মনোনয়ন না দিলে মনিরুল ইসলাম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা বিএনপির এক নেতা জানান, বিএনপি এ আসনে কৌশলগত কারণে জোটের শরিকদের জন্য শেষপর্যন্ত এনপিপির চেয়ারম্যান ড.ফরিদুজ্জামান ফরহাদকে মনোনীত করলে তিনি যেন খালি মাঠে গোল দিতে না পারেন, সেজন্য বিএনপি নেতা মনিরুল ইসলাম ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হতে পারেন। কারণ তিনি মাঠের রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন।