জাতীয়

ডিআইজি মিজানের ১৪ বছরের কারাদণ্ড

Is Jennifer Aniston currently in a relationship?

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় সাময়িক বরখাস্ত পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানের ১৪ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

এছাড়া একই মামলায় মিজানের ছোটভাই মাহবুবুর রহমান, ভাগনে মাহমুদুল হাসান ও স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্নার সাত বছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (২১ জুন) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক মঞ্জুরুল ইমাম এ রায় ঘোষণা করেন।

গত ৫ জুন একই আদালত রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য ২১ জুন দিন ধার্য করেন। এ মামলায় ডিআইজি মিজানসহ আসামি সংখ্যা চারজন।

এ মামলায় ডিআইজি মিজান কারাগারে আটক রয়েছেন। জামিনে রয়েছেন তার ছোটভাই মাহবুবুর রহমান ও ভাগনে মাহমুদুল হাসান। তবে মিজানের স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্না শুরু থেকে পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রয়েছে।

দুদকের এ মামলায় ২০২০ সালের ১ জুলাই আগাম জামিন আবেদন করলে ডিআইজি মিজানকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। মিজানকে তাৎক্ষণিক পুলিশের হাতে তুলে দেন আদালত। গ্রেফতারের পর তাকে শাহবাগ থানায় নেওয়া হয়। ওই বছরের ২ জুলাই মিজানের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত।

মিজানুর রহমান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বিয়ে গোপন করতে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্ত্রীকে গ্রেফতার করানোর অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া এক সংবাদ পাঠিকাকে প্রাণনাশের হুমকি ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করা হয়। নারী নির্যাতনের অভিযোগে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে তাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদরদপ্তরে সংযুক্ত করা হয়।

এরপর দুদক কর্মকর্তার সঙ্গে ঘুস লেনদেনের বিষয়টি সামনে আসার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ডিআইজি মিজানকে সাময়িক বরখাস্তের একটি প্রস্তাব রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। ওই বছরের ২৫ জুন তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার প্রস্তাবে অনুমোদন দেন রাষ্ট্রপতি।

২০১৯ সালের ২৪ জুন দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে (ঢাকা-১) দুদকের পরিচালক মঞ্জুর মোর্শেদ বাদী হয়ে ডিআইজি মিজানসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে তিন কোটি ২৮ লাখ ৬৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং তিন কোটি সাত লাখ পাঁচ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়। এ মামলায় ডিআইজি মিজানসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারি দুদকের পরিচালক মঞ্জুর মোর্শেদ অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

সাময়িক বরখাস্ত ডিআইজি মিজান ছাড়া চার্জশিটভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন- মিজানের স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্না ওরফে রত্না রহমান, ছোটভাই মাহবুবুর রহমান ও ভাগনে মাহমুদুল হাসান।

২০২০ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকার ৬ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আসিফুজ্জামান আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এ মামলায় ৩৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৭ জন সাক্ষ্য দেন।

২০২২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি অবৈধভাবে তথ্যপাচার ও ঘুস লেনদেনের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমান মিজানের তিন বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম। এ মামলায় দুদকের তৎকালীন পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের আট বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন।

মিজানের রায়ে বিচারক বলেন, ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ১৬৫(এ) ও ১০৯ ধারায় অভিযোগ প্রামাণিত হয়েছে। দুই ধারার অপরাধ একই ধরনের হওয়ায় তাকে একটি ধারায় অর্থাৎ ১৬৫(এ) ধারায় তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হলো।

বাছিরের রায়ে বিচারক বলেন, বাছিরের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ১৬১, ধারা, মানিলন্ডারিং আইন ও দুদক আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তাকে মানিলন্ডারিং আইনে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও ৮০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া দণ্ডবিধি ১৬১ ধারায় তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হলো। উভয় সাজা একসঙ্গে চলবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker