
রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। জামায়াতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শনিবার (১০ জুন) দুপুর ২টায় এ সমাবেশ করবেন তারা।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ, আমিরে জামায়াত ডা: শফিকুর রহমানসহ জাতীয় নেতৃবৃন্দ ও ওলামায়ে কেরামের মুক্তি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার দাবিতে এ সমাবেশের ডাক দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ।
এর আগে গত ৫ জুন সমাবেশ করার জন্য অনুমতি চেয়ে ডিএমপিতে যান জামায়াতসমর্থক কয়েকজন আইনজীবী। ডিএমপিতে প্রবেশ করার আগে তাদেরকে আটক করে নিয়ে যায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। অবশ্য দু’ঘণ্টা পর তাদেরকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
উল্লেখ্য গতকাল পুলিশ বিকল্প ভেন্যুর প্রস্তাব দিলে, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিরোধ, আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ জাতীয় নেতা ও আলেম-ওলামাদের মুক্তি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার দাবিতেই সমাবেশ করতে চায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আগামীকাল শনিবার (১০) জুন বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে তিন দফা দাবিতে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করার জন্য পুলিশের কাছে অনুমতি চেয়েছে।
আবেদনে জামায়াত ইসলামী শুধু বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে করার জন্য লিখিত দিয়েছে প্রশাসনকে। পুলিশ জামায়েতের আবেদন পত্রটি গ্রহণের পর পুলিশের পক্ষ থেকে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।
তবে জামায়াতে ইসলামীর একটি সূত্র থেকে জানা যায়, আবেদন পত্রটি গ্রহণের পর পুলিশের পক্ষ থেকে বায়তুল মোকাররম স্থান ব্যতীত তিনটি ভেন্যুর কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে রাজধানী কমলাপুর এলাকার গোলাপবাগ মাঠের কথা বলেছে।
অন্য একটি সূত্র জানায়, জামায়াত ইসলামীকে পল্টন এলাকা ছাড়া বিকল্প স্থানের কথা বলা হয়েছে আইনজীবীদের। পুলিশ ও আইনজীবীদের সমাবেশের স্থান নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। এরপর আজ রাতে দলটির নীতি নির্ধারণী বৈঠক থেকে সিদ্ধান্ত আসতে পারে। কোথায় করা যায় সমাবেশ। তবে বায়তুল মোকাররম এলাকায় সমাবেশ করার ব্যাপারে বেশি আগ্রহী দলটি।
এদিকে আজ শুক্রবার (৯ জুন) রাতে রাজধানীর ধানমন্ডি লেকের রবীন্দ্র সরোবরে বাংলাদেশ পুলিশের সন্ত্রাস দমন ও আন্তর্জাতিক অপরাধ প্রতিরোধ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের নির্মিত সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদবিরোধী জনসচেতনতামূলক পথনাটক ‘মুখোশ’ প্রদর্শনী দেখা শেষে সাংবাদিকদের ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেছেন, জামায়াত সমাবেশের অনুমতি পাবে কি না, সে বিষয় সিদ্ধান্ত রাতে জানানো হবে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, আপনারা জানেন জামায়াতের অতীত ইতিহাস রয়েছে। তারা পুলিশের ওপর নানা নির্যাতন করেছে। বিভিন্ন বোমা হামলার ঘটনায় তাদের নাম এসেছে। দীর্ঘদিন তারা প্রকাশ্যে আসেনি। এখন তারা প্রকাশ্যে সভা-সমাবেশ করতে চায়।
গোলাম ফারুক আরো বলেন, জামায়াত সমাবেশের অনুমতি চেয়ে ডিএমপিতে আবেদন করেছে, তারা আগামীকাল বিকেলে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে সমাবেশ করতে চায়। আমরা বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কাছে তথ্য চেয়েছি জামায়াত শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করবে কি না? আমরা তথ্য পেয়েছি। আজ রাতে আমার সহকর্মীদের নিয়ে বসবো।
তিনি বলেন, যদি তাদের সমাবেশের অনুমতি দিই, তাহলে সেটা কিভাবে দিতে হবে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কতটুকু ঠিক থাকবে, সে বিষয়ে আজ রাতেই সিদ্ধান্ত জানানো হবে। অথবা আগামীকাল সকালে এ বিষয় জানানো হবে।
এর আগে ৫ জুন সমাবেশ করার জন্য অনুমতি চেয়ে ডিএমপিতে যান জামায়াত ইসলামীর সমর্থিত আইনজীবীরা। ডিএমপিতে প্রবেশ করার আগে তাদেরকে আটক করে নিয়ে যায় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরে দু’ঘণ্টা পর তাদেরকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
৫ জুন জামায়াতকে অনুমতি না দিয়ে কর্মদিবস থাকার কারণে তাদের সমাবেশ করার অনুমতি দেয়নি বলে জানায় পুলিশ। তাই এবার ছুটির দিন শনিবার দেখে তারা অনুমতির আবেদন করেছে। দলটি আশা করে আগামীকাল শনিবার ১০ জুন ডিএমপি তাদের এবার অনুমতি দেবে।