
একটি শিশুর জন্ম প্রতিটি পরিবারেই আনন্দের বিষয়। তবে সন্তান ছেলে হবে নাকি মেয়ে—এই প্রশ্নটি গর্ভাবস্থায় সবার মনে ঘোরাফেরা করে। কেউ ভাবে সে বাবার মতো হবে, কেউ বা ভাবে মার মতো। যুগে যুগে মানুষ এই বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের বিশ্বাস পোষণ করেছে। কেউ মনে করত, মায়ের মাধ্যমেই সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারিত হয়, আবার কেউ ভাবত বাবা-মা উভয়ের যৌথ প্রভাবেই তা ঘটে।
কিন্তু আধুনিক বিজ্ঞান যা বলছে, তা সত্যিই চমকে দেওয়ার মতো। আর সবচেয়ে বিস্ময়কর বিষয় হলো, এই সত্যটি পবিত্র কোরআনে উঠে এসেছে প্রায় দেড় হাজার বছর আগেই।
বিজ্ঞান বলছে, ১৮৮২ সালে জার্মান জীববিজ্ঞানী ওয়াল্টার ফ্লেমিং যখন কোষের গঠন পর্যবেক্ষণ করছিলেন, তখন তিনি ক্রোমোজোম নামের এক বিস্ময়কর জিনিস আবিষ্কার করেন। মানুষের শরীরে থাকে ২৩ জোড়া মোট ৪৬টি ক্রোমোজোম। এর মধ্যে একটি জোড়া থাকে লিঙ্গ নির্ধারণের জন্য। একে বলা হয় লিঙ্গ ক্রোমোজোম।
নারীদের লিঙ্গ ক্রোমোজোম হয় এক্স এক্স। পুরুষদের হয় এক্স ওয়াই। নারীর ডিম্বাণু সবসময় এক্স ক্রোমোজোম দেয়। কিন্তু পুরুষের শুক্রাণু হয় এক্স, নয়তো ওয়াই ক্রোমোজোম বহন করে। যদি শুক্রাণুটি এক্স হয়, তবে শিশুর লিঙ্গ হবে মেয়ে (এক্স এক্স)। আর যদি শুক্রাণুটি ওয়াই হয়, তবে শিশুর লিঙ্গ হবে ছেলে (এক্স ওয়াই)। অর্থাৎ, সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণের মূল দায়িত্ব পুরুষের।
এই তথ্যের স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যায় কোরআনের একাধিক আয়াতে। সূরা আন-নাজ’মে বলা হয়েছে: “আর তিনিই সৃষ্টি করেছেন যুগল—পুরুষ ও নারী, এক ফোঁটা বীর্য থেকে, যখন তা স্খলিত হয়।”
এই আয়াতে বলা হয়েছে, পুরুষের বীর্যের মাধ্যমেই পুরুষত্ব বা নারীত্ব নির্ধারিত হয়। আজকের বিজ্ঞানও বলছে ঠিক একই কথা—লিঙ্গ নির্ধারণ হয় পুরুষের বীর্যে থাকা এক্স বা ওয়াই ক্রোমোজোমের মাধ্যমে। নারীর এ প্রক্রিয়ায় কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না।
এ ধরনের আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের জানিয়ে দিচ্ছেন, এই জগৎ ও সৃষ্টি কোনো কাকতালীয় বিষয় নয়। এর পেছনে রয়েছে নির্ভুল পরিকল্পনা ও সৃষ্টিকর্তার অসীম জ্ঞান।
পবিত্র কোরআন এমন এক গ্রন্থ, যেখানে বহু বিষয়ের গভীরতম সত্য বহু শতাব্দী আগেই তুলে ধরা হয়েছে। যা আজকের আধুনিক বিজ্ঞানের সঙ্গে হুবহু মিলে যায়। এই সত্যগুলো মানুষকে বারবার মনে করিয়ে দেয়, সবকিছুর পেছনে রয়েছেন একমাত্র সৃষ্টিকর্তা, যিনি প্রতিটি বিষয় নিখুঁতভাবে পরিচালনা করেন।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |