জাতীয়

কাপ্তাই হ্রদে পানি সংকট, বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধের শঙ্কা

Is Jennifer Aniston currently in a relationship?

দীর্ঘদিন অনাবৃষ্টির কারণে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে নেমে গেছে পানির স্তর। এ কারণে ২৪২ মেগাওয়াট উৎপাদন সক্ষমতার এই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বুধবার (৭ জুন) বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে মাত্র ২৫ মেগাওয়াট। গত কয়েক দিন ধরেই এই পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। আগামী দশ দিন বৃষ্টি না হলে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যেতে পারে এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি।

জানা গেছে, কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিটের মধ্যে সবকটি সচল থাকার পরেও পানি সংকটের কারণে একসঙ্গে চালু করা যাচ্ছে না। বৃহস্পতিবার চালু ছিল ৪৬ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন এক নম্বর ইউনিটটি। এতে ২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে।

কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এটিএম আবদুজ্জাহের বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিটে ২৪২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রধান উৎস পানির স্তর হ্রদে অনেক কমে গেছে। দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমেছে।

 

বৃহস্পতিবার রুলকার্ভ (হ্রদের পানির পরিমাপক) অনুযায়ী কাপ্তাই হ্রদে পানির উচ্চতা ছিল ৭২.৩৭ এমএসএল। অথচ এ সময়ে পানির উচ্চতা থাকার কথা ছিল ৭৭.৮২ এমএসএল। বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে ২৫ মেগাওয়াট।’ তিনি আরও বলেন, ‘বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদনে গেলে দ্রুত কাপ্তাই হ্রদের পানি শেষ হয়ে যাবে। এ কারণে একটি ইউনিট সচল রেখে অল্প পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য বৃষ্টি খুবই জরুরি। আগামী ৮-১০ দিন বৃষ্টি না হলে কাপ্তাই বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যেতে পারে।’

আরো পুড়ুনঃ  মানুষ যাতে শন্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে পারে সে ব্যবস্থা করেছি : প্রধানমন্ত্রী

এদিকে, কাপ্তাই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে পর্যাপ্ত পানি না ছাড়ার কারণে কর্ণফুলী নদী হয়ে হালদা নদীতে ঢুকছে সমুদ্রের লবণাক্ত পানি। এ কারণে চট্টগ্রাম ওয়াসার দুটি শোধনাগারে পানি পরিশোধনের পরও লবণাক্ত পানি যাচ্ছে নগরবাসীর কাছে। এ কারণে লবণাক্ত ও দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে উঠেছে ওয়াসার পানি। মুখে নেওয়া যাচ্ছে না।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ কে এম ফয়জুল্লাহ বলেন, ‘বৃষ্টি না হওয়ায় কাপ্তাই হ্রদে পানির স্তর কমে গেছে। এ কারণে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে পর্যাপ্ত পানি ছাড়া হচ্ছে না কর্ণফুলী নদীতে। এতে নদীর উজানে মিঠা পানির প্রবাহ কমে গেছে। কর্ণফুলী হয়ে হালদা নদীতে ঢুকছে সাগরের লোনা পানি। দৈনিক ৯ কোটি করে দুটি ১৮ কোটি লিটার উৎপাদন সক্ষমতার পানি সরবরাহ প্রকল্প জোয়ারের সময় বন্ধ রাখতে হচ্ছে। কেননা, ওই সময় পানি পরিশোধনের পরও লবণ থেকে যাচ্ছে। জোয়ার ছাড়াও পানিতে লবণ মিলছে। ভালোভাবে বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত ওয়াসার পানির লবণাক্ততার সমস্যা কাটবে না।’

আরো পুড়ুনঃ  রেজা কিবরিয়াকে তুলোধুনো করলেন আসিফ নজরুল

কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্র জানায়, কোনও জ্বালানি ছাড়াই শুধু হ্রদের পানি ব্যবহার করে দেশে সবচেয়ে কম খরচে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে এ বিদ্যুৎকেন্দ্র। পাঁচটি ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষমতা ২৪২ মেগাওয়াট। এরমধ্যে এক নম্বর ইউনিটে ৪৬ মেগাওয়াট, দুই নম্বর ইউনিটে ৪৬ মেগাওয়াট, তিন নম্বর ইউনিটে ৫০ মেগাওয়াট, চার নম্বর ইউনিটে ৫০ মেগাওয়াট এবং পাঁচ নম্বর ইউনিটে ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে। উল্লেখ্য, ১৯৬০ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর ওপর বাঁধ দেওয়া হয়। এ বাঁধের ফলে ২৫৬ বর্গমাইল এলাকাজুড়ে বিশাল জলাধার সৃষ্টি হয়। এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ মানবসৃষ্ট হ্রদ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker