হাইফা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে যোগ দিতে ইসরায়েলে যান বলিউডের অভিনেত্রী নুসরাত ভারুচা। এরপরই শনিবার (৭ অক্টোবর) সকালে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলে ব্যাপক রকেট হামলা চালায়। ইসরায়েলও পাল্টা হামলা চালানো শুরু করে গাজায়। এ পরিস্থিতিতে ইসরায়েলে আটকা পড়েন নুসরাত ভারুচা।
বোমার শব্দে ঘুম ভাঙে তার। হোটেলের বেসমেন্টে ৩৬ ঘণ্টা লুকিয়ে প্রাণে বাঁচেন নায়িকা। পরে দেশে ফিরে এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন তিনি।
ইসরায়েলে যান বলিউড অভিনেত্রী নুসরাত ভারুচা। শনিবার আচমকাই বদলে যায় পরিস্থিতি।
প্রাণে বাঁচতে তেলআবিবের একটি হোটেলের বেসমেন্টে আশ্রয় নিয়েছিলেন নুসরাত। ভারতীয় সরকারের হস্তক্ষেপে দেশে ফেরেন তিনি। দেশের মাটিতে পা দেওয়ার পর সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার পরিস্থিতিতে ছিলেন না তিনি।
মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) ভিডিওবার্তায় ওই দিনের ঘটে যাওয়া সংঘাতের বিষয়ে কথা বললেন নুসরাত। তিনি বলেন, এখন আমি একদম সুরক্ষিত। শুক্রবার রাতে ইসরায়েলের হোটেলে ডিনার শেষ করে ঘুমাতে যাই। সকালে ঘুম ভাঙে বোমার শব্দে। আজ যখন সকালে নিজের বাড়িতে ঘুম থেকে উঠলাম, বোমের শব্দ ছিল না।
তিনি আরও বলেন, অনুভব করলাম আমরা কতো ভাগ্যবান। আমি সত্যি ভাগ্যবান যে আমরা ভারতের মতো দেশে জন্মেছি। আমরা এখানে সুরক্ষিত। আমি সত্যি ধন্যবাদ জানাতে চাই ভারত সরকারকে, ভারতীয় দূতাবাসকে, ইসরায়েলি দূতাবাসকে— যাদের সহায়তা ও সাহায্যে আমি ভালোভাবে নিজের দেশে ফিরতে পেরেছি। একই সঙ্গে আমার প্রার্থনা যুদ্ধবিধ্বস্ত মানুষের জন্য। যেন দ্রুত এই পরিস্থিতি বদলে যায়, শান্তি ফিরে আসে।
দীর্ঘ বিবৃতিতে নুসরাত লিখেছেন, ওই ৩৬ ঘণ্টা আমার সারাজীবন মনে থেকে যাবে। এটি আমার জীবনের এমন এক অভিজ্ঞতা যা কখনই ভুলতে পারব না।
বরুণ ধাওয়ান, মণীশ মালহোত্রা, হর্ষবর্ধন কাপুরসহ ইন্ডাস্ট্রির বন্ধুরা নুসরাতের পোস্টে মন্তব্য করেছেন। নুসরাত যে সুরক্ষিতভাবে দেশে ফিরেছেন তাতে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন সবাই।
আকেলি ছবিতে নুসরাতের সঙ্গে অভিনয় করেছেন ইসরায়েলি অভিনেতা সাহি হালেভি ও আমির বোট্রাস। সেই ছবির প্রিমিয়ারেই ইসরায়েলে যান নুসরাত। সেখানে নানান ঐতিহাসিক ও দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখেন তিনি।
নুসরাত তার বিবৃতিতে জানান, তেল আবিবের যে হোটেলে তিনি ছিলেন, সেখান থেকে ভারতীয় দূতাবাস মাত্র ২ কিমি দূরে অবস্থিত। অথচ সেই দূরত্ব অতিক্রম করাও কার্যত অসম্ভব ছিল। রাস্তায় হামাসের সদস্যরা নির্বিচারে গুলি চালানো শুরু করে!
নুসরাত লেখেন, তখন ধীরে ধীরে বুঝতে পারছি যে ফ্লাইট ধরতে তো পারবই না, উল্টো যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে আটকা পড়ব। আমরা তখন সাহায্যের আশায় সর্বত্র ফোন করতে শুরু করি।
তেল আবিবের হোটেল থেকে বেরিয়ে বেন গুরিও বিমানবন্দরে পৌঁছানো সহজ ছিল না। ভারতের উদ্দেশ্যে বিমান যখন রওনা দেয় সেটা স্বর্গীয় অনুভূতি বলেই মনে হয়েছিল নুসরাতের।
প্রসঙ্গত, প্রায় দুই দশক ধরে চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন নুসরাত। ‘সনু কে টিটু কি সুইটি’ হিট হওয়ার পর থেকেই ব্যবসাসফল ও প্রশংসিত সিনেমায় দেখা গেছে অভিনেত্রীকে। গত কয়েক বছরে নুসরাত অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে আছে ‘ড্রিম গার্ল’, ‘আজিব দসতানস’, ‘ছোরি’ ইত্যাদি।